Wellcome to National Portal
সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগ গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার
Text size A A A
Color C C C C

সর্ব-শেষ হাল-নাগাদ: ১৪ মার্চ ২০২৪

মাননীয় মন্ত্রীর প্রোফাইল

 

মাননীয় সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী

জনাব ওবায়দুল কাদের এমপির জীবন-বৃত্তান্ত

 

 

নোয়াখালী জেলার কোম্পানীগঞ্জ থানার বড় রাজাপুর গ্রামে ১৯৫০ সালের ১ জানুয়ারি জন্মগ্রহণ করেন ওবায়দুল কাদের। তাঁর বাবা মোশারফ হোসেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সহপাঠী হিসেবে কোলকাতায় ইসলামিয়া কলেজে অধ্যয়ন করেন। মা বেগম ফজিলাতুন্নেসা একজন সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারের সন্তান। সহধর্মিনী বেগম ইসরাতুন্নেসা কাদের একজন খ্যাতিমান আইনজীবী।

 

ওবায়দুল কাদের ছাত্রজীবন থেকেই মেধার স্বাক্ষর রেখে চলেছেন। মেধাবী শিক্ষার্থীরা রাজনীতি বিমুখ-একথাটি তিনি ভুল প্রমাণ করেছেন। জনাব কাদের বসুরহাট সরকারি এএইচসি উচ্চ বিদ্যালয় থেকে প্রথম বিভাগে এসএসসি ও নোয়াখালী সরকারি কলেজ থেকে মেধা তালিকায় স্থান করে এইচএসসি পাস করেন। এরপর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে রাষ্ট্রবিজ্ঞানে উচ্চশিক্ষা গ্রহণ করেন।

 

ছাত্রজীবনেই তাঁর রাজনীতিতে হাতেখড়ি। অন্যায় ও অবিচারের বিরুদ্ধে আজন্ম লড়াকু ওবায়দুল কাদের ১৯৬৬ সালে ৬ দফা আন্দোলন, ১৯৬৯ সালে গণআন্দোলন ও ছাত্রদের ১১ দফা আন্দোলনে সক্রিয় ভূমিকা পালন করেন। দেশমাতৃকার মুক্তির টানে ১৯৭১ সালে তিনি মহান মুক্তিযুদ্ধে অংশ নেন এবং কোম্পানীগঞ্জ থানা মুজিব বাহিনীর (বিএলএফ) অধিনায়কের দায়িত্ব পালন করেন।

 

জনাব কাদের রাজনৈতিক জীবনে একাধিকবার কারাবরণ করেন। ১৯৭৫-এর পর এক নাগাড়ে দীর্ঘ আড়াই বছর তাঁকে কারাগারে থাকতে হয়। কারাগারে থাকা অবস্থায়ই তিনি ১৯৭৮-১৯৮০ মেয়াদে বাংলাদেশ ছাত্রলীগ কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি নির্বাচিত হন এবং ১৯৮০ সালে পুনরায় বাংলাদেশ ছাত্রলীগ কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি নির্বাচিত হয়ে ১৯৮১ সাল পর্যন্ত দায়িত্ব পালন করেন। তাঁর সাংগঠনিক দক্ষতার কারণেই সে সময়ে সারা দেশে বঙ্গবন্ধুর আদর্শের সংগঠন বাংলাদেশ ছাত্রলীগ হয়ে উঠে জনপ্রিয় ছাত্র সংগঠন। এরপর তিনি যোগ দেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগে।

 

ওবায়দুল কাদের ১২ জুন ’৯৬-এর ৭ম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী হিসেবে নোয়াখালী-৫ আসন থেকে জাতীয় সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। একই বছরের ২৩ জুন যুব ও ক্রীড়া এবং সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব পান তিনি। সততা ও নিষ্ঠার সাথে দায়িত্ব পালনের মধ্য দিয়ে জনাব কাদের দেশের যুবসমাজের উন্নয়নের পাশাপাশি ক্রীড়াঙ্গনে সফলতা বিশেষ করে দেশের ক্রিকেটকে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে তুলে ধরতে ও টেস্ট মর্যাদা অর্জনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন।

 

২০০২ সালের ত্রি-বার্ষিক সম্মেলন থেকে ২০০৯-এর সম্মেলন পর্যন্ত তিনি বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের প্রথম যুগ্ম সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেন। ১/১১ পরবর্তী তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে ২০০৭ সালের ৯ মার্চ জরুরি বিধিতে গ্রেফতার হয়ে ১৭ মাস ২৬ দিন কারাবরণ করেন তিনি। ২০০৮ সালের ৫ সেপ্টেম্বর জনাব কাদের জামিনে মুক্ত হন। কারাগারে থাকাকালে কারাজীবনের বর্ণনা দিয়ে ‘অনুস্মৃতি: যে কথা বলা হয়নি’ গ্রন্থটি লিখেন।

 

জনাব কাদের ২০০৮ সালের ২৯ ডিসেম্বর দ্বিতীয়বারের মতো নোয়াখালী-৫ আসন থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন এবং তথ্য মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন। ২০০৯ সালে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের ত্রি-বার্ষিক সম্মেলনে প্রথমবারের মতো তিনি দলের প্রেসিডিয়াম সদস্য নির্বাচিত হন। এছাড়া তিনি বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সংসদীয় মনোনয়ন বোর্ড, স্থানীয় সরকার মনোনয়ন বোর্ডের সদস্য।

 

এর আগে ২৩ জুন ২০০০ থেকে ২৬ ডিসেম্বর ২০০২ পর্যন্ত জনাব কাদের বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির শিক্ষা ও সংস্কৃতি বিষয়ক সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেন।

 

২০০৪ সালের ২১ আগস্ট বঙ্গবন্ধু এভিনিউ-এ ভয়াবহ গ্রেনেড হামলায় তিনি মারাত্মক আহত হন। গ্রেনেডের স্প্লিন্টার তাঁর শরীরকে ক্ষতবিক্ষত করে। কিছু সরাতে পারলেও এখনও তাঁর শরীরে রয়েছে অসংখ্য স্প্লিন্টার।

 

২০১১ সালের ২৮ নভেম্বর বঙ্গভবনে মহাজোট সরকারের মন্ত্রী হিসেবে শপথ গ্রহণ করেন এবং ০৫ ডিসেম্বর যোগাযোগ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত হন। এ ছাড়া তিনি কিছুদিনের জন্য রেলপথ মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত দায়িত্ব পালন করেন। সরেজমিন পরিদর্শন ও নিবিড় মনিটরিং এর মাধ্যমে দেশের সড়ক অবকাঠামো উন্নয়নে তাঁর নিরলস প্রয়াস দেশ-বিদেশে প্রশংসিত হয়েছে। ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারি দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তিনি তৃতীয়বারের মতো সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। একাদশ ও দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনেও টানা ৪র্থ ও ৫ম বারের মতো নোয়াখালী-৫ আসনের জনগণের নেতা হিসেবে পুন:নির্বাচিত হন। তাঁর নিষ্ঠা ও নিরলস প্রচেষ্টার জন্য বারবার তাকে সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব দেয়া হয়, যেখানে তিনি টানা ৪র্থ মেয়াদে কাজ করছেন।

 

উপমহাদেশের অন্যতম প্রাচীন রাজনৈতিক দল আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হয়েছেন একসময়ের তুখোড় ছাত্রনেতা ওবায়দুল কাদের। ২২ ও ২৩ অক্টোবর ২০১৬ তারিখে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে অনুষ্ঠিত বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের ২০তম জাতীয় সম্মেলনে ওবায়দুল কাদের প্রথমবারের মতো সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন এবং ২০ ও ২১ ডিসেম্বর ২০১৯ তারিখে ২১তম জাতীয় সম্মেলনে ২য় বারের মতো সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন। সর্বশেষ ২৪ ডিসেম্বর ২০২২ তারিখে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে অনুষ্ঠিত বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের ২২তম জাতীয় সম্মেলনে টানা ৩য় বারের মতো সাধারণ সম্পাদক নিবার্চিত হন জননন্দিত এ নেতা।

 

দেশের অভিজ্ঞ রাজনীতিবিদ ওবায়দুল কাদের ছাত্রনেতা থেকে গণমানুষের নন্দিত নেতায় পরিণত হয়েছেন দীর্ঘ ত্যাগ আর কর্মীদের ভালোবাসার কারণেই। আওয়ামী লীগের দুর্দিনে, দুঃসময়ে ওবায়দুল কাদের বঙ্গবন্ধুর আদর্শ থেকে বিচ্যুত হননি কখনো। বঙ্গবন্ধুর আদর্শ বাস্তবায়ন করতে গিয়ে বারবার তিনি কারানির্যাতিত হয়েছেন। স্বৈরাচারবিরোধী আর গণতান্ত্রিক আন্দোলনে রেখেছেন সাহসী ভূমিকা।

 

রাজনীতির পাশাপাশি সাংবাদিকতা আর লেখালেখির জগতেও জনপ্রিয় ওবায়দুল কাদের। দৈনিক বাংলার বাণী পত্রিকার সহকারী সম্পাদক হিসেবে দীর্ঘসময় কাজ করেছেন। ইতোমধ্যে তাঁর ১০টি গ্রন্থ প্রকাশিত হয়েছে। ২০১৫ সালে বাংলা একাডেমি’র বইমেলায় তাঁর লেখা উপন্যাস গাঙচিল সর্বোচ্চ সংখ্যক কপি বিক্রি হয়েছে। তাঁর লেখা গ্রন্থের মধ্যে রয়েছে বাংলাদেশের হৃদয় হতে, এই বিজয়ের মুকুট কোথায়, মেঘে মেঘে অনেক বেলা, রচনা সমগ্র, কারাগারে লেখা অনুস্মৃতি : যে কথা বলা হয়নি, নির্বাচিত কলাম এবং ভ্রমণকাহিনী তিন সমুদ্রের দেশে। কোলকাতা থেকে প্রকাশিত তাঁর এ রিভ্যলুশন বিট্রেইড গ্রন্থটি দেশ-বিদেশে ব্যাপক আলোচিত একটি গ্রন্থ। এছাড়া তিনি রবার্ট পেইনের লেখা দ্যা টর্চারড এন্ড দ্যা ড্যামন্ড গ্রন্থের ভাবানুবাদে লিখেন পাকিস্তানের কারাগারে বঙ্গবন্ধু।

 

পেশাগত জীবনে জনাব কাদের অনেক দেশ সফর করেছেন। এরমধ্যে ভারত, পাকিস্তান, শ্রীলঙ্কা, যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, দক্ষিণ আফ্রিকা, চীন, জার্মানি, সিঙ্গাপুর, থাইল্যান্ড, তুরস্ক, ইতালি, সৌদি আরব, সংযুক্ত আরব আমিরাত, ভুটান, নেপাল, ফিলিপাইন এবং জাপান উল্লেখযোগ্য।